গত এপ্রিল মাসের ২৬ তারিখে মন্ত্রিপরিষেদ বিভাগ এক প্রজ্ঞাপন জারী করেন যে, ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে দেশের সকল সরকারি-আধাসরকারি ভবন, স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি ভবনসমূহে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় পতাকা পরিপূর্ণভাবে উত্তোলন করতে হবে।
দিবসটি যথাযোগ্য পালনের উদ্দেশ্য গতকাল উপজেলা পরিষদের হলরুমে শিক্ষক দিবস পালন উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তাজ উদ্দিন সংশ্লিষ্ট সকলকে সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য বিশেষভাবে নির্দেশ প্রদান করেন। কিন্তু তা মান্য করেননি খানসামা উপজেলার একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
 বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত খানসামা উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বালাডাঙ্গী উচ্চ বিদ্যালয়, মাগুরমারী উচ্চ বিদ্যালয়, সুবর্ণখুলি সাবুদেরহাট দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, আঙ্গারপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় ও পাকেরহাট ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা এবং আঙ্গারপাড়া আশ্রম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, সরহর্দ্দ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন মাধ্যমিক, প্রাথমিক ও মাদ্রাসার অমান্য করে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেননি।
জাতীয় পতাকা উত্তোলন বিষয়ে মাগুরবাড়ি উচ্চ বিদ্যালেয় প্রধান শিক্ষক মতিন্দ্র নাথ রায় মুঠোফোনে বলেন, আমি এ বিষয়ে জানি না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলে কেন পতাকা উত্তোলন করব।
অপর দিকে সুবর্ণখুলি সাবুদেরহাট দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রকাশ রায় বলেন, পতাকা উত্তোলন করতে হবে এ বিষয়ে আমি তেমন কিছু জানি না, নির্বাহী অফিসারের মিটিংয়ে উপস্থিত ছিলাম এ বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দিয়েছে কিনা আমার জানা নেই।
এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষক ভারতী রানী বলেন, আমি এ বিষয়ে জানি না। আমি স্মার্ট ফোন ব্যবহার করি না। বিদ্যালয়ের ল্যাপটপ ও ইন্টারনেট সংযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের রাউটারটি নষ্ট।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এরশাদুল হক চৌধুরী সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, বিষয়টি দুঃখজনক এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে এ কাজ করবে আমাদের জানা ছিল না। তারপরেও আমরা বিষয়টি দেখতেছি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
এ বিষয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মঞ্জরুল হকের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ হলে তিনি বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক। আমরা তাদেরকে মেসেজের মাধ্যমে জানিয়েছি। রবিবার আমরা সেই বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তাজ উদ্দিন জানান, গতকাল শিক্ষক দিবস পালনের প্রস্তুতি সভায় আমি সকল প্রধান শিক্ষককে পতাকা উত্তোলনের বিষয়টি জানিয়েছি এবং অফিসিয়াল ফেসবুক আইডি থেকে জাতীয় পতাকা উত্তোলন বিষয়ে একটি পোস্ট করি। এত প্রচারণার পরেও শিক্ষকরা এমন কাজ করবে আমি ভাবতেও পারিনি, উপজেলার যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়নি। সে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ছবির ক্যাপশন: দিনাজপুরের খানসামার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পতাকা বিহীন দেখা যায়।